ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ঝুঁকিতে মগনামা কাকপাঁড়া সাইক্লোন শেল্টার

mail.google.comইমরান হোসাইন. পেকুয়া :::

পেকুয়া উপজেলায় প্রাকৃতিক বিভিন্ন দূর্যোগ আঘাত হানলে সবচেয়ে বেশী ক্ষয়ক্ষতি হবে এমন এলাকা সমূহের মধ্যে মগনামা ইউনিয়নের সাগরঘেষা গ্রাম কাঁকপাড়া অন্যতম। অতীতে ঘটে যাওয়া কয়েকটি প্রাকৃতিক দূর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান দেখলেই তা অনুমেয়।

 কিন্তু ওই এলাকার মানুষদের দূর্যোগের আঘাত থেকে রক্ষা করতে এবং দূর্যোগকালীন ঝুঁকি কমাতে ১৯৯৩সালে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কতৃক স্থাপিত সাইক্লোন শেল্টার নিজেই এখন চরম ঝুঁকিতে আছে। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু’র আঘাতে বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে জোয়ারের পানি ভবনের পাদদেশ ঘেষে নিয়মিত চলাচল করায় সাইক্লোন শেল্টারটির নিচের মাটি এক-তৃতীয়াংশ সরে গেছে। স্থানীয়

প্রসাশনের সুষ্ট তদারকির অভাবে উক্ত সাইক্লোন শেল্টারের এই অবস্থা বলে স্থানীয়দের অভিমত। ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু’র তান্ডবে ঘরবাড়ি হারানো প্রায় ১৫টি পরিবার বর্তমানেও উক্ত শেল্টারে অবস্থান করছে।

 দুই যুগ আগে ১৯৯১সালের ২৯এপ্রিলে উপকূলের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়। যার নাম ছিল ‘ম্যারি এন’। ঘূর্ণিঝড়টি প্রলয়ংকরী শক্তি নিয়ে আঘাত হেনেছিল বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলে। ঘূর্ণিঝড়ের ফলে তীব্র জলোচ্ছ্বাসে ফুঁসে ওঠা সমুদ্রের ২৫ফুট উঁচু ঢেউয়ের ছোবলে টেকনাফ থেকে ভোলা পর্যন্ত উপকূল ভেসে যায়। ওই প্রলয়ে সরকারি হিসেবে প্রাণহানির সংখ্যা ১লাখ ৩৮হাজার বলা হলেও বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা ছিল প্রায় দ্বিগুণ। প্রাণ হারায় প্রায় ২লাখ মানুষ। গৃহহারা হয়েছে প্রায় ৫০লাখ মানুষ।

 এছাড়া চলতি বছরের ২১মে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু’র আঘাতে পেকুয়া উপজেলার মগনামা, রাজাখালী ও উজানটিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধের অংশ দিয়ে নিয়মিত জোয়ারের পানি ঢুকে। লবণাক্ত পানি ঢুকে মানুষের ঘরবাড়ি, আউশ ফসল, বীজতলা, চিংড়ী ঘের, লবণ মাঠ, পুকুর ও মাছ, রাস্তাঘাট ইত্যাদির ক্ষয়ক্ষতি হয়।

 পরিকল্পিত বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় পেকুয়ার উপকূলীয় মগনামা, উজানটিয়া, রাজাখালী ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ জনগণ প্রতি বর্ষায আরও একটি ২৯এপ্রিলের ছোবল আতংকে রীতিমতো তটস্থ থাকেন।

 অপরদিকে উপজেলার উপকূলীয় এসব ইউনিয়নে প্রায় ৫০হাজারেরও বেশি মানুষের বসবাস। ঐসব এলাকায় আশ্রয়ণ কেন্দ্র কাম সরকারী-বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে প্রায় ১২টি। এনজিও’র অর্থায়নে নির্মিত শেল্টার আছে প্রায় ৬টি। এসব আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে জলোচ্ছ্বাস ও ঘুর্ণিঝড়ের সময় আশ্রয় নিতে পারে উপকূলের প্রায় ২০হাজার মানুষ। বাকীরা থাকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। তাই আরো আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন ও বর্তমানে যেসব আছে তা রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবিও জানান স্থানীয়রা।

 পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফুর রশীদ খান বলেন, সাইক্লোন শেল্টারটি সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এটি রক্ষায় খুব শীঘ্রই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: